বুধবার, 28 মে 2025 | [bangla_date]
  1. বিশেষ সংবাদ
  2. বাংলাদেশ
  3. রাজধানী
  4. শিক্ষা
  5. রাজনীতি
  6. আন্তর্জাতিক
  7. বাণিজ্য
  8. বিনোদন
  9. খেলাধুলা
  10. প্রযুক্তি
  11. জীবনযাপন
  12. আইন অঙ্গন
  13. ভিডিও
  14. মতামত
  15. সম্পাদকীয়

বিশ্ব নিরাপদ মাতৃত্ব দিবস: নিরাপদ মা, সুস্থ জাতি গঠনের অঙ্গীকার

মো: জিসান রহমান, মাভাবিপ্রবি প্রতিনিধি
মো: জিসান রহমান, মাভাবিপ্রবি প্রতিনিধি
বুধবার, ২৮ মে ২০২৫ - ৩:২৭ অপরাহ্ন

মো: জিসান রহমান,মাভাবিপ্রবি প্রতিনিধি:

আজ ২৮ মে, বিশ্বজুড়ে পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক নারী স্বাস্থ্য দিবস, যা বাংলাদেশে ‘বিশ্ব নিরাপদ মাতৃত্ব দিবস’ হিসেবে পরিচিত। ১৯৮৭ সাল থেকে এ দিনটি আমাদের দেশে যথাযোগ্য মর্যাদা ও গুরুত্বসহকারে পালন করা হচ্ছে। এবারের প্রতিপাদ্য—‘নিরাপদ সন্তান প্রসব, মায়ের অধিকার’—শুধু একটি স্লোগান নয়, বরং একটি বাস্তব আহ্বান।
এই উপলক্ষে দেশের প্রতিটি জেলা হাসপাতাল, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র এবং কমিউনিটি ক্লিনিকে পালিত হচ্ছে ‘বিশেষ মাতৃস্বাস্থ্যসেবা সপ্তাহ’। এতে গর্ভবতী মায়েদের বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা, পরামর্শ এবং প্রাসঙ্গিক সেবা দেওয়া হচ্ছে।
বাংলাদেশ মাতৃস্বাস্থ্য সুরক্ষায় আগ্রসর হলেও এখনো অনেক নারী স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত। সামাজিক কুসংস্কার, দারিদ্র্য, অবহেলা এবং স্বাস্থ্যসেবার অপ্রতুলতা মাতৃমৃত্যুর বড় কারণ হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছে। বিএমএমএস-এর তথ্য অনুযায়ী, গর্ভকালীন সময়ে শতকরা ১৫ শতাংশ নারী জটিলতায় ভোগেন এবং শতকরা ৫১ ভাগ মাতৃমৃত্যু হয় প্রসব-পরবর্তী রক্তক্ষরণ ও খিঁচুনির কারণে।
আরও উদ্বেগের বিষয় হলো, মাত্র ২৬% নারী চারবার প্রসবপূর্ব সেবা গ্রহণ করে থাকেন। ফলে নানা জটিলতায় পড়ে মায়ের পাশাপাশি নবজাতকের জীবনও ঝুঁকির মুখে পড়ে। এ অবস্থার উন্নয়নে সরকার ৫৯টি জেলা হাসপাতাল, ৬৮টি মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র এবং ১৩২টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জরুরি প্রসূতি সেবার ব্যবস্থা করেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গর্ভবতী কর্মজীবী নারীদের জন্য কমপক্ষে ছয় মাসের মাতৃত্বকালীন ছুটি নিশ্চিত করা জরুরি। কিন্তু বাস্তবে অধিকাংশ নারী—বিশেষত নারীশ্রমিকরা—এই সুবিধা পান না। তাদেরকে ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করতে হয় গর্ভাবস্থায়ও, যা মা ও সন্তানের জন্য বিপজ্জনক।
নিরাপদ মাতৃত্বের পথে বড় বাধা হিসেবে রয়েছে বাল্যবিবাহ, কিশোরী মায়েদের পুষ্টিহীনতা, অপরিকল্পিত গর্ভধারণ, রক্তস্বল্পতা এবং অদক্ষ দাইয়ের হাতে সন্তান প্রসব। অনেক নারী ফিস্টুলাসহ নানা জটিল রোগে আক্রান্ত হন ভুল চিকিৎসা বা অজ্ঞতার কারণে।
জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (SDG-3) অনুযায়ী, ২০৩০ সালের মধ্যে বৈশ্বিক মাতৃমৃত্যুর হার ৭০ জনে নামিয়ে আনার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এ লক্ষ্য পূরণে প্রয়োজন সামাজিক সচেতনতা, স্বাস্থ্যসেবার প্রাপ্যতা এবং কুসংস্কারমুক্ত দৃষ্টিভঙ্গি।
সুতরাং, নিরাপদ মাতৃত্ব নিশ্চিত করতে হবে পরিবার, সমাজ এবং রাষ্ট্রীয় স্তরে সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে। শুরু থেকেই নারীর যত্ন, সচেতনতা বৃদ্ধি এবং সঠিক চিকিৎসাসেবা পৌঁছে দেওয়ার মাধ্যমেই গড়ে উঠবে সুস্থ মা ও একটি সুস্থ প্রজন্ম।
নিরাপদ হোক মাতৃত্বের প্রতিটি মুহূর্ত—এই হোক আমাদের অঙ্গীকার।

সর্বশেষ - বিশেষ সংবাদ

আপনার জন্য নির্বাচিত