শুক্রবার, 30 মে 2025 | [bangla_date]
  1. বিশেষ সংবাদ
  2. বাংলাদেশ
  3. রাজধানী
  4. শিক্ষা
  5. রাজনীতি
  6. আন্তর্জাতিক
  7. বাণিজ্য
  8. বিনোদন
  9. খেলাধুলা
  10. প্রযুক্তি
  11. জীবনযাপন
  12. আইন অঙ্গন
  13. ভিডিও
  14. মতামত
  15. সম্পাদকীয়

যশোর জেনারেল হাসপাতালে এইডসে আক্রান্ত গর্ভবতীর সিজারের সিদ্ধান্ত, নেই চিকিৎসক

প্রতিবেদক
এস হাসমী সাজু যশোর প্রতিনিধি
শুক্রবার, ৩০ মে ২০২৫ - ১২:২৪ অপরাহ্ন

যশোর ২৫০শয্যা জেনারেল হাসপাতালে এইডসে আক্রান্ত এক প্রসূতী নারীর সিজারের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু নেওয়া হয়নি চিকিৎসক, সেবিকা ও ভর্তি রোগীর সুরক্ষা ব্যবস্থা। জীবাণুমুক্ত ও অপারেশনের ব্যবহারিত মফ, গজসহ অন্যান্য সামগ্রী নিষ্কাশন ও পরিশোধনের ব্যবস্থা না করেই এই অপারেশনের দিন আগামী রোববার (১জুন) নির্ধারণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও গাইনী বিভাগের চিকিৎসকরা বলছেন, অপারেশনের পরবর্তী ৩দিন অপারেশন থিয়েটারের কার্যক্রম বন্ধ করে ঐ রোগীর সাজারিয়ান কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। এই নিয়ে অন্যান্য বিভাগের চিকিৎসকদের সাথে কর্তৃপক্ষের মতবিরোধ দেখা দিয়েছে। অন্যান্য বিভাগের চিকিৎসকের দাবি, একজন রোগীর জন্য হাসপাতালের হাজার রোগীর সমস্যা হয়; এধরণের সিদ্ধান্ত নেওয়া কর্তৃপক্ষের উচিৎ হবে না।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক চিকিৎসকরা অভিযোগ করে বলেন, প্রতিদিন হাসপাতালে প্রায় ১৫/২০টি গাইনী ইওসি প্রসূতী রোগীর ডেলিভারি সিজার হয়। এছাড়াও সাজার্রি ৭/১০টা, অর্থপেডিক্স ৬/৮টা, ইএনটি ৩/৫টি, ডেন্টাল ২/৫টি অতিগুরুত্বপূর্ণ অপারেশন করা হয়ে থাকে। কিন্তু হাসপাতালে ৩দিন অপারেশন বন্ধ থাকলে এই রোগীরা যাবে কোথা.? এছাড়াও জরুরি সড়ক দুর্ঘটনা, চাকুমারা রোগীদের অবস্থা কি হবে?। তাই হাসপাতালের চিকিৎসকসহ সচেতন মহলের দাবি এইডসে আক্রান্ত প্রসূতীকে নিধারিত হাসপাতালে রেফার করে উন্নত সেবার ব্যবস্থা করা।

যশোর জেনারেল হাসপাতালের প্রশাসনিক ও গাইনী বিভাগের সূত্রে জানা গিয়েছে, যশোরের একজন নারী প্রসূতী গত বছর হাসপাতালের গাইনী বিভাগে চেকআপ করতে আসেন। পরে ঐ গর্ভবতী নারীর রুটিন চেকআপ শুরু হয়। কিন্তু ৬মাস পূণ হওয়াই চিকিৎসক ঐ নারীকে বিভিন্ন পরীক্ষা করার পরামর্শ দেন। তখন তার শরীরের এইচআইভি/এইডস শনাক্ত হয়। তখন থেকে রোগীকে কিভাবে চিকিৎসা প্রদান করা হবে সেই চিন্তা শুরু হয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। এভাবে হাসপাতালে বহিঃবিভাগে চিকিৎসা চলেন ঐ রোগীর। পরে গাইনী বিভাগের চিকিৎসক ইয়াসমিন আক্তার গত বুধবার (২৮ মে) ঐ নারীর সিজারের দিন নির্ধারণ করেন। কিন্তু স্বাস্থ্য ঝুঁকি ও নিরাপত্তার অভাব থাকায় তিনি করতে পারেননি। পরে আগামী রোববার (১ জুন) নতুন দিন নিধারণ করেন ডাক্তার ইয়াসমিন। এতে করে চিকিৎসকদের মধ্যে মতপার্থক্য দেখা দিয়েছে। ফলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ঐ নারীর সিজার নিয়ে সিদ্ধান্তত্মহীনতায় রয়েছেন।

এ ব্যাপারে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন গাইনী ডাক্তার বলেন, এ রোগীর অপারেশন কোন বিষয় না। বিষয়টি হচ্ছে, শরীর থেকে নির্গত রক্ত ও তরল উপকরণ কীভাবে এবং কোথায় নিষ্কাশন ও পরিশোধন করা হবে। সে বিষয়ে হাসপাতালে নির্দিষ্ট কোনো ব্যবস্থা নেই। শতভাগ প্রস্তুতি ছাড়া এমন রোগীর সিজার করা হলে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক ও কর্মচারীদের মধ্যে সংক্রমণের ঝুঁকি রয়েছে।

এছাড়া আতঙ্কে থাকবে প্রসূতিরা ওই ওটিতে অস্ত্রোপচারে যেতে অনীহা প্রকাশ করবে। এ ব্যাপারে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাক্তার মো. হুসাইন শাফায়াত বলেন, “বিষয়টি নিয়ে ঢাকায় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষে সাথে যোগাযোগ করা হয়েছে। তারা ঐ রোগীকে আগামী বুধবার সিজার করার সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। কিন্তু কিছু সমস্যা দেখা দেওয়ায় তা সম্ভব হচ্ছে না।

হাসপাতালের গাইনী বিভাগের চিকিৎসক ইয়াসমিন আক্তার বলেন, রোগী ডাক্তাররের কাছে আসলে তার চিকিৎসা করা ডাক্তারের ফরজ। আর সেই রোগীসহ অন্যান্যকেদর নিরাপত্তার দায়িত্ব হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। গাইনী বিভাগ আগামী রোবিবার ঐ রোগীর সিজারের প্রস্তুতি নিচ্ছে। বাকিটা নিশ্চিত করবেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

যশোরের সিভিল সার্জন ডাক্তার মাসুদ রানা বলেন, “এইচআইভি/এইডসে আক্রান্ত রোগীর সিজার সাধারণ হাসপাতালে করা ঝুঁকিপূর্ণ। আলাদা ও পর্যাপ্ত সুরক্ষাসম্পন্ন হাসপাতালেই এ ধরনের সিজার করাই যুক্তিযুক্ত। এজন্য সংক্রমণ প্রতিরোধের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা থাকা হাসপাতালে জরুরি।”

সর্বশেষ - বিশেষ সংবাদ